০৯:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

শোক দিবসে কাঙ্গালীভোজের কথা বলে সরকারি গুদাম থেকে চাল চাঁদা নিতেন আ.লীগ সভাপতি ‘বাইদে’ মাহাবুব

আ.লীগ সভাপতি ‘বাইদে’ মাহাবুব

বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ইশতেহারে ও দলীয় প্রধানদের বক্তব্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের কথা জানালেও বিগতদিনে  সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি তে জড়িয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের ঘনিষ্ঠরা। যা থেমে ছিল না ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও।

৫ আগস্ট পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর ১৫ ই আগস্ট  শোক দিবস উপলক্ষে কাঙ্গালীভোজের কথা বলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর কুমার কীর্তনীয়ার কাছে ২০ টন সরকারি চাল চাঁদা দাবি করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান । প্রথম খাদ্যগুদাম থেকে ২০ টন চাল দিতে অস্বীকৃতি জানালে কর্মকর্তার উপর ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব আলী খান।  পরে ৩ টন চাল সরকারি গুদাম থেকে তাকে দেওয়া হয় বলে স্বীকার করেছেন  খাদ্য গুদমের ওই কর্মকর্তা।

অভিযোগ স্বীকারোক্তির এমন একটি ভিডিও ফুটেজ  হাতে এসেছে। যেখানে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর কুমার কীর্তনীয়া অভিযোগ করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ১৫ আগস্ট উপলক্ষে ২০ টন চাল চাঁদা দাবি করেন। পরে তিনি (খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা) চাল দিতে অস্বীকৃতি জানালে মাহাবুব আলী খান তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেন। পরে জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে ৩ টন সরকারি চাল দেওয়া হয়। ভিডিও আরো শোনা যায়, বিগত বছর গুলোতেও ১৫ই আগস্ট উপলক্ষে ২০ টন চাল চাঁদা নিতেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহাবুব আলী খান।

শোক দিবস পালনের নামে সরকারি গুদাম থেকে ৩ টন চাল চাঁদা নিলেন জেলা আ. লীগ সভাপতি মাহাবুব
বাইদে মাহবুব

অভিযোগ স্বীকার করে খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর কুমার কীর্ত্তনীয়া বলেন, দায় ঠেকে চাল দিতাম ভাই।  গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান ১৫ আগস্ট শোক দিবস উপলক্ষে কাঙ্গালীভোজের জন্য  আমার কাছে ২০ টন চাল দাবি করেন। চাল না দেয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন জনের কাছে মিথ্যা অভিযোগ দেন। পরে আমি তাকে তিন টন চাল দিয়েছি

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন দিলেন দ্বায়সারা বক্তব্য। তিনি বলেন, ৩ টন তো দুরের কথা ৩ কেজি চাল সরকারি গুদাম থেকে দেওয়ার সুযোগ নেই। যদি তিনি দিয়ে থাকেন তাহলে সেটি তার দায়িত্ব, আমার এ বিষয়ে জানা নাই।

আরও পড়ুন: কাজ না করেই প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, দুদকের জালে আটকা

অভিযোগ আছে হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান কাউকে পরোয়া করতেন না। ক্ষমতা দেখাতেন মন্ত্রীর চেয়েও বেশি। নিজ এলাকার মানুষ তাকে চিনতেন বাইদে মাহাবুব নামে। জেলার সকল প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের কাছ থেকে চাঁদা হিসেবে নিতেন নিজের গাড়ির তেল । নিয়ম করে ওই সকল কর্মকর্তা শহরের পাশের একটি ফিলিং স্টেশন থেকে চাদা হিসেবে তেল কিনে দিতেন। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রকল্প থেকে মোটা অংকের কমিশন সহ  বদলি বানিজ্য ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তদবির বানিজ্য করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে মাহবুব আলী খানের বিরুদ্ধে। এভাবেই জেলার বিভিন্ন স্থানে জমি কেনা সহ গড়েছেন অঢেল সম্পত্তি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, মাহবুব আলী খানের যোগাযোগ ছিল স্বয়ং শেখ  হাসিনার সঙ্গে যার কারনে তিনি দেশের কোন মন্ত্রী কে গোনার মধ্যে রাখতেন না। বিভিন্ন দরিদরবার নিয়ে মন্ত্রীদের ফোন দিয়ে আদেশ করতেন এবং সেই কাজ সঙ্গে সঙ্গে করে নিতেন। এইভাবে দলকে সুসংগঠিত করার কথা বলে সেন্ট্রাল থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা এনে আত্মসাৎ করেছেন।

এসময় তিনি আরো অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর হাসিনার ছেলে জয়ের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা এনেছিলেন ১৫ই আগস্টে শোক পালনের নামে প্রতিবিপ্লব ঘটাতে।যদিও তিনি প্রথমেই ব্যর্থ হয়েছেন।  তবে সেই টাকা তিনি এখনও খরচ করেন নাই।এখন সেনাবাহিনীর উপর হামলার প্রধান আসামী হয়ে পলাতক রয়েছে যার কারনে সেই টাকার আর হিসাব পাওয়া যায়নি।

নিউজরুম/

footer-area { background: #024f75; }

শোক দিবসে কাঙ্গালীভোজের কথা বলে সরকারি গুদাম থেকে চাল চাঁদা নিতেন আ.লীগ সভাপতি ‘বাইদে’ মাহাবুব

প্রকাশিত : সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ইশতেহারে ও দলীয় প্রধানদের বক্তব্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের কথা জানালেও বিগতদিনে  সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি তে জড়িয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের ঘনিষ্ঠরা। যা থেমে ছিল না ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও।

৫ আগস্ট পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর ১৫ ই আগস্ট  শোক দিবস উপলক্ষে কাঙ্গালীভোজের কথা বলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর কুমার কীর্তনীয়ার কাছে ২০ টন সরকারি চাল চাঁদা দাবি করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান । প্রথম খাদ্যগুদাম থেকে ২০ টন চাল দিতে অস্বীকৃতি জানালে কর্মকর্তার উপর ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব আলী খান।  পরে ৩ টন চাল সরকারি গুদাম থেকে তাকে দেওয়া হয় বলে স্বীকার করেছেন  খাদ্য গুদমের ওই কর্মকর্তা।

অভিযোগ স্বীকারোক্তির এমন একটি ভিডিও ফুটেজ  হাতে এসেছে। যেখানে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর কুমার কীর্তনীয়া অভিযোগ করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ১৫ আগস্ট উপলক্ষে ২০ টন চাল চাঁদা দাবি করেন। পরে তিনি (খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা) চাল দিতে অস্বীকৃতি জানালে মাহাবুব আলী খান তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেন। পরে জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে ৩ টন সরকারি চাল দেওয়া হয়। ভিডিও আরো শোনা যায়, বিগত বছর গুলোতেও ১৫ই আগস্ট উপলক্ষে ২০ টন চাল চাঁদা নিতেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহাবুব আলী খান।

শোক দিবস পালনের নামে সরকারি গুদাম থেকে ৩ টন চাল চাঁদা নিলেন জেলা আ. লীগ সভাপতি মাহাবুব
বাইদে মাহবুব

অভিযোগ স্বীকার করে খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রবীর কুমার কীর্ত্তনীয়া বলেন, দায় ঠেকে চাল দিতাম ভাই।  গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান ১৫ আগস্ট শোক দিবস উপলক্ষে কাঙ্গালীভোজের জন্য  আমার কাছে ২০ টন চাল দাবি করেন। চাল না দেয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন জনের কাছে মিথ্যা অভিযোগ দেন। পরে আমি তাকে তিন টন চাল দিয়েছি

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন দিলেন দ্বায়সারা বক্তব্য। তিনি বলেন, ৩ টন তো দুরের কথা ৩ কেজি চাল সরকারি গুদাম থেকে দেওয়ার সুযোগ নেই। যদি তিনি দিয়ে থাকেন তাহলে সেটি তার দায়িত্ব, আমার এ বিষয়ে জানা নাই।

আরও পড়ুন: কাজ না করেই প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, দুদকের জালে আটকা

অভিযোগ আছে হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান কাউকে পরোয়া করতেন না। ক্ষমতা দেখাতেন মন্ত্রীর চেয়েও বেশি। নিজ এলাকার মানুষ তাকে চিনতেন বাইদে মাহাবুব নামে। জেলার সকল প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের কাছ থেকে চাঁদা হিসেবে নিতেন নিজের গাড়ির তেল । নিয়ম করে ওই সকল কর্মকর্তা শহরের পাশের একটি ফিলিং স্টেশন থেকে চাদা হিসেবে তেল কিনে দিতেন। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন প্রকল্প থেকে মোটা অংকের কমিশন সহ  বদলি বানিজ্য ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে তদবির বানিজ্য করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে মাহবুব আলী খানের বিরুদ্ধে। এভাবেই জেলার বিভিন্ন স্থানে জমি কেনা সহ গড়েছেন অঢেল সম্পত্তি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, মাহবুব আলী খানের যোগাযোগ ছিল স্বয়ং শেখ  হাসিনার সঙ্গে যার কারনে তিনি দেশের কোন মন্ত্রী কে গোনার মধ্যে রাখতেন না। বিভিন্ন দরিদরবার নিয়ে মন্ত্রীদের ফোন দিয়ে আদেশ করতেন এবং সেই কাজ সঙ্গে সঙ্গে করে নিতেন। এইভাবে দলকে সুসংগঠিত করার কথা বলে সেন্ট্রাল থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা এনে আত্মসাৎ করেছেন।

এসময় তিনি আরো অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর হাসিনার ছেলে জয়ের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা এনেছিলেন ১৫ই আগস্টে শোক পালনের নামে প্রতিবিপ্লব ঘটাতে।যদিও তিনি প্রথমেই ব্যর্থ হয়েছেন।  তবে সেই টাকা তিনি এখনও খরচ করেন নাই।এখন সেনাবাহিনীর উপর হামলার প্রধান আসামী হয়ে পলাতক রয়েছে যার কারনে সেই টাকার আর হিসাব পাওয়া যায়নি।

নিউজরুম/