সাদা পোশাকের ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন ২০২১ সালে। এবার টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ভারতের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে হায়দরাবাদে। আগামী ১২ অক্টোবরের ম্যাচটি দিয়ে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন ৩৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগে আজ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ নিজেই এই ঘোষণা দেন। বিদায়ের ঘোষণা দিয়ে আজ মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘ভারত সিরিজের শেষ ম্যাচের পরেই আমি টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেব। আসলে এটা আমি এই সফরে আসার আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম। আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচক ও বোর্ড সভাপতিকে আমার সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। আমি মনে করি, এই সংস্করণ থেকে সরে দাঁড়ানোর এটিই সঠিক সময়।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটে নিভৃতচারী এক সৈনিক মাহমুদউল্লাহ। কখনোই কথার জবাবে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি নিরবে নিজেকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন। যতবার ফিরেছেন, ততবার কথা বলেছে তার ব্যাট অথবা বল। মাহমুদউল্লাহকে বাংলার ক্রিকেটের নিরব ঘাতক বা সাইলেন্ট কিলার বলা হতো। এত সুন্দর উপাধি আসলে তার সঙ্গেই মানায়।
তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির মেলবন্ধন ঘটাতে ব্যর্থ মাহমুদউল্লাহর বিদায় যেন হয়ে দাঁড়িয়েছিল সময়ের ব্যাপার। পারফর্ম্যান্সে এখনও এগিয়ে অনেকের চেয়ে। তবু, থামতে হতো কখনও। সেই সময়টা এগিয়ে আনলেন তিনি। বোঝা হতে না চেয়ে বিদায় জানাচ্ছেন মাথা উঁচু করে।
দিল্লিতে নিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নামার আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দেশের হয়ে ১৩৯টি ম্যাচ খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ১১৭.৭৪ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ২ হাজার ৩৯৫। এই ফরম্যাটে তার সর্বোচ্চ রান ৬৪।
ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও দেশের জার্সিতে ভূমিকা রেখেছেন এই অলরাউন্ডার। বল হাতে হাত ঘুরিয়ে এই ফরম্যাটে উইকেট নিয়েছেন ৪০টি। সেরা বোলিং ফিগার ১০ রান দিয়ে তিন উইকেট।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড মাহমুদউল্লাহর দখলে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তার অধিনায়কত্বে মোট ৪৩টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি জয়ও তার। অধিনায়ক হিসেবে ১৬টি ম্যাচ জিতেছেন মাহমুদউল্লাহ। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও লাল-সবুজের নেতৃত্ব দেন তিনি।
২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর বর্ণিল ক্যারিয়ার। ভারতের বিপক্ষে শেষের আগে হাতে কেবল দুটি ম্যাচ। এরপরই অতীত হবেন মাহমুদউল্লাহ, পেছনে রাখবেন অম্লমধুর ১৭টি বছর।
নিউজ রুম / এজেএ